শিশির, কুয়াশা ও মেঘ কিভাবে সৃষ্টি হয়?

▣ শিশির সৃষ্টি:
কোন বায়ুর জলীয় বাষ্প ধারণের ক্ষমতা ওই বায়ুর উষ্ণতার উপর নির্ভর করে। অর্থাৎ বায়ুর উষ্ণতা বাড়লে বায়ুর জলীয় বাষ্প ধারণের ক্ষমতাও বাড়ে এবং উষ্ণতা কমলে জলীয় বাষ্প ধারনের ক্ষমতাও কমে যায়। তবে সাধারণত বায়ুতে উপস্থিত জলীয় বাষ্প অসম্পৃক্ত অবস্থায় থাকে। রাত্রে বেলায় ভূপৃষ্ঠের তাপ বিকিরণ করলে ভূপৃষ্ঠ সংলগ্ন বায়ু ঠান্ডা হতে থাকে। এভাবে বায়ুর উষ্ণতা ধীরে ধীরে কমতে থাকায় একসময় ওই বায়ু তার জলীয় বাষ্প দ্বারা সম্পৃক্ত হয়। ফলে বায়ুতে উপস্থিত কিছু পরিমাণ জলীয় বাষ্প ঘনীভূত হয়ে জলবিন্দুর আকার ধারণ করে। আর ওই জলবিন্দু গুলি ঘাস পাতা প্রভৃতির ওপরে জমা হতে থাকে। এই জলবিন্দুগুলিকেই আমরা শিশির বলে থাকি।

how-dew-is-formed
Image source: pixabay.com

কুয়াশা সৃষ্টি:
রাত্রে বেলায় কোনো স্থানের বাতাস স্থির থাকলে এবং কোনো কারণে ওই স্থানের ভূপৃষ্ঠের কাছাকাছি থাকা বায়ুর উষ্ণতা কমে গেলে, ওই বায়ু তার মধ্যে থাকা জলীয় বাষ্প দ্বারা সম্পৃক্ত হয়ে পড়ে। তখন ওই বায়ুর কিছু পরিমান জলীয় বাষ্প ঘনীভূত হয়ে বাতাসে উপস্থিত ভাসমান ধূলিকণা, কয়লার গুঁড়ো প্রভৃতির ওপর জল কণার আকারে জমে গিয়ে বাতাসে ভাসতে থাকে। একেই আমরা কুয়াশা বলে থাকি। শীতকালে সকালের দিকে প্রায়ই ঘন কুয়াশা দেখা যায়। বেলা বাড়লে, সূর্য ওঠার সাথে সাথে বায়ুমণ্ডলের উষ্ণতাও বাড়ে, ফলে বায়ুতে ভাসমান জলকণাগুলি বাষ্পে পরিণত হওয়ায় কুয়াশা আস্তে আস্তে অদৃশ্য হয়ে যায়। তাছাড়া শহর অঞ্চলে বায়ুতে বেশি পরিমাণে কয়লা গুঁড়ো ও ধূলিকণা উপস্থিত থাকায় আরো ঘন কুয়াশা দেখা যায়।

মেঘ সৃষ্টি:
জলীয় বাষ্পপূর্ণ বায়ু হালকা হাওয়ায় বায়ুমন্ডলের উপরের দিকে উঠতে থাকে। উপরের দিকের বায়ুস্তরে চাপ কম থাকায় ওই বায়ু ওপরে উঠে আয়তনে বেড়ে যায়। ফলে ওই বায়ুর উষ্ণতা কমে যায়। তাছাড়া উপরের দিকের বায়ুর উষ্ণতা অপেক্ষাকৃত কম হওয়ায় ওই জলীয়বাষ্পপূর্ণ বায়ু আরো ঠান্ডা হয়ে যায়। এভাবে ওই জলীয় বাষ্পপূর্ণ বায়ুর উষ্ণতা যখন শিশিরাঙ্কের নিচে নেমে যায় তখন কিছু পরিমাণ জলীয় বাষ্প ওই বায়ুতে থাকা ভাসমান ধূলিকণার গায়ে জমে জলবিন্দুর আকারে ভাসতে থাকে। এরকম অসংখ্য জলবিন্দু যখন একসঙ্গে এক জায়গায় জমা হয় তখন তাকে আমরা মেঘ বলি।

*

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
নবীনতর পূর্বতন